জয়পুরহাটে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের বদলির দাবি

স্টাফ রিপোর্টার সাদি
By -
0

    স্টাফ রিপোর্টার সাদি

    ১৭ আগস্ট


জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ঘটনার পর দায় এড়াতে তিনি ওই শিক্ষার্থী ও তার মাকে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে গালাগাল করেছেন বলে অভিযোগ করেছে অভিভাবকরা। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

রোববার (১৭ আগস্ট) শিশুটির মা তাসলিমা আক্তার শাপলাসহ ২৫ জন অভিভাবক স্বাক্ষর করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। পরে বিকেলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের দ্রুত বদলির দাবি জানান।

শিক্ষক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের টেস্ট হিসেবে “আমাদের ছোট নদী” ছড়া লিখতে দেন। এক শিক্ষার্থী কয়েকটি অক্ষর ছোট-বড় করে লেখায় এবং ক্লাসে কিছুটা বিশৃঙ্খলা করায় তিনি কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এতে শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। পরদিন সমাবেশে লাইন বাঁকা হওয়ার অভিযোগে ওই শিশুসহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আবারও প্রহার করা হয়।

অভিভাবকদের অভিযোগ, শিশুটি বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি জানালে মা বিদ্যালয়ে ব্যাখ্যা চাইতে গেলে শিক্ষক নজরুল ইসলাম উল্টো তাদের চাঁদাবাজ আখ্যা দেন এবং গালাগাল করেন।

শিশুটির মা তাসলিমা আক্তার শাপলা বলেন, “আমার ছেলে কাঁদতে কাঁদতে সব বলেছে। আমি শিক্ষককে প্রশ্ন করলে তিনি উল্টো বলেন আমার ছেলে নাকি ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণির শিশু কীভাবে চাঁদা চাইতে পারে? আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”

স্থানীয় মনজুর ইসলাম কবির বলেন, “সামান্য ভুলের কারণেই তিনি শিশুদের মারধর করেন। প্রশংসাপত্রের জন্য নিয়মবহির্ভূতভাবে টাকা নেন। এমন আচরণের কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমছে।”

প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম অবশ্য দাবি করেছেন, “ক্লাসে হট্টগোল করায় আমি মেরেছি, এটা ঠিক হয়নি। তবে মাসখানেক আগে ওই ছাত্র আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিল।”

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত আছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আক্কেলপুর ইউএনও মনজুরুল আলম বলেন, “ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, শিশুদের মারধর ও অস্বাভাবিক অভিযোগ তোলার কারণে ওই প্রধান শিক্ষককে আর বিদ্যালয়ে দেখতে চান না তারা।


Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)